আইয়্যামে বীজের রোজা কি এবং এই রোজা রাখার ফজিলত,সম্মানিত পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব আইয়ামে বীজ কি এবং এর রোজা রাখার ফজিলত কি। এই আইয়ামে বীজ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম কি বলেছেন সকল হাদিস আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজাদ আপনারাই রোজার ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারেন এবং রাসূল সাল্লাহু সালাম এই দিনে কিভাবে ইবাদত করতেন সে সকল বিষয়ে জানতে পারবেন।
প্রত্যেক চন্দ্র মাসের মাঝামাঝি সময় তথা ১৩-১৫ তারিখ তিন দিন আইয়ামে বিজের রোজা রাখা সুন্নাত। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে এ রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়েকেরামকে এ রোজা রাখতে বলেছেন। সে হিসেবে এ (রজব) মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ (তের, চৌদ্দ ও পনের ) তারিখ হলো ২৬, ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি। যারা এ তিন দিন রোজা রাখবে।
শবে বরাত কেন পালন করা হয়-এই রাতের ফজিলত ও আমল
আইয়ামে বিজের রোজার রাখার নির্দেশ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম। এই আইয়ামে বীজের রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আজকে আমরা সে বিষয়ে আপনাদের কিছু তথ্য শেয়ার করব। এবং কোরআন হাদীসে এ বিষয়ে যে আয়াত গুলো রয়েছে এবং হাদিস গুলো রয়েছে সেগুলো আপনাদের সাথে তুলে ধরব। যাতে আপনারা খুব সহজেই বিষয়টি বুঝতে পারেন।
> হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখল; সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ অতঃপর এর সমর্থনে আল্লাহ তাআলা তাঁর কিতাবে নাজিল করেন-
‘যে একটি নেকি নিয়ে আসে তার জন্য রয়েছে তার ১০গুণ।’ অতএব একদিন ১০ দিনের সমান।’ (তিরমিজি)
হজরত ইবনু মিলহান আল-ক্বাইসি তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আইয়ামে বিজের রোজার ব্যাপারে নসিহত করেছেন; আমরা যেন তা (মাসের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ পালন করি। তিনি আরও বলেছেন, এটা সারা বছর রোজা রাখার মতোই।’ (আবু দাউদ)
এবছর আইয়ামে বিজের রোজা রাখার তারিখ
এখন আপনাদের সুবিধার্থে আপনারা এই বছর যে রমজান মাস টি রয়েছে সেই মাসের কত তারিখে আইয়ামে বিজের রোজা রাখতে হবে সেই তারিখটি এখন জানিয়ে দেবো।
হিজরী 1443 সালের জমাদিউস সানি মাসের 1 তারিখে ছিল 5 জানুয়ারি 2022। জমাদিউস সানি মাসের আইয়ামে বিজের রোজা গুলো রাখতে হবে যথাক্রমে 17 18 19 জানুয়ারি রোজ সোমবার মঙ্গলবার বুধবার।
আইয়্যামে বীজের রোজা রাখার ফজিলত
রাসূলুল্লাহ সা: বলেন : ‘প্রতি মাসে তিনটি রোজা একযুগ রোজার সমতুল্য, মনোরম সে দিন তিনটি হলো ১৩, ১৪ ও ১৫’ (নাসায়ী)। ইবনু আব্বাস রা: বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সা: সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বীজের রোজা ভঙ্গ করতেন না’ (নাসায়ী)। রাসূল সা: বলেন : ‘কোনো মাসে তিনটি রোজা রাখলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রাখবে’ (আহমদ)।
প্রত্যেক চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ এই দিনগুলোকে “আইয়ামে বীজ” বা আলোকিত দিনসমূহ বলা হয়। কারণ এই দিনগুলোতে চাঁদ সবচাইতে বেশি আলোকিত থাকে। প্রিয় রাসূলুল্লাহ (সা.) আইয়ামে বীজের তিনদিন নিয়মিত সিয়াম পালন করতেন।
আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক মাসে (নফল) সিয়াম পালন করলে শুক্লপক্ষের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো” (তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন, সারা বছর ধরে সিয়াম পালনের সমান” (বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫)