কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি
সম্মানিত গ্রাহক, আমরা অনেকেই আছি কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নিতে চায়।যারা কর্মসংস্থান ব্যাংকিং সিস্টেমে লোন নিতে চায় তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। আপনারা আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন। তাহলে আপনাদের এই ব্যাংকের ঋণ নেওয়ার সকল ধরনের তথ্য পেয়ে যাবেন।আজকে আমরা এই কর্মসংস্থান ব্যাংক হতে কিভাবে ঋণ পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আপনারা আমাদের এই ওয়েবসাইটটি বুকমার্ক করে রাখবেন এবং আপনাদের বন্ধুদের শেয়ার করে দিবেন যাতে তারাও এই ব্যাংক থেকে ঋণ সেবা গ্রহণ করতে পারে।
পরিচ্ছেদসমূহ
- কর্মসংস্থান ব্যাংক হতে ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা
- যে সকল খাতে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে তাহলো
- ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মসূচীর সুদহার নিম্নরূপ
কর্মসংস্থান ব্যাংক হতে ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা
কর্মসংস্থান ব্যাংক হতে ঋণ পাওয়ার জন্য যেসকল যোগ্যতা প্রয়োজন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে সেসকল যোগ্যতা শেয়ার করা হলো। নিচের এই যোগ্যতাগুলো যদি আপনার না থাকে তাহলে আপনি এই কর্মসংস্থান ব্যাংক হতে ঋণ পাবেন না।
- উদ্যোক্তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপী হলে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
- বেকার/অর্ধ বেকার হতে হবে।
- প্রকল্প পরিচালনার বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ/অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- উদ্যোক্তাকে ইকুইটি বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ঋণ নীতিমালার অন্যান্য নিয়ম অনুসরণে সক্ষম হতে হবে।
- ঋণ ব্যবহারের যোগ্যতাসহ ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ও আর্থিক আচরণে সুনামের অধিকারী হতে হবে
- বয়স সাধারণত ১৮ হতে ৪৫ বছর হতে হবে। তবে পুরাতন ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য
- শাখার অধিক্ষেত্রের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা না হলে শাখার অধিক্ষেত্রের একজন স্থায়ী বাসিন্দাকে ঋণের গ্যারান্টার হতে হবে।
আরো পড়ুন: বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম-১০০০০ টাকা লোন
যে সকল খাতে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে তাহলো
শিল্প-কারখানা : মৎস্য হ্যাচারী, পোল্ট্রি হ্যাচারী, কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা, প্রাণি খাদ্য তৈরির কারখানা, মৎস্য খাদ্য তৈরির কারখানা, চিড়া/মুড়ি কল/ শিল্প, ধানের চাতাল/রাইস মিল, বেকারী শিল্প, অয়েল মিল, স’মিল, ফলজাত খাদ্য শিল্প (জ্যাম/জেলি/জুস/আচার/শরবত/সিরাপ/সস), সুষম সার প্রস্ত্ততকরণ, আটা/ময়দা/সুজি প্রস্ত্ততকরণ, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার, স্টার্চ, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ উৎপাদনকারী শিল্প,আইসক্রিম ফ্যাক্টরী, গুঁড়া মসলা উৎপাদনকারী শিল্প, সুগন্ধি চাল উৎপাদন, ডাল প্রক্রিয়াজাতকরণ, নারিকেল তেল উৎপাদন, বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাবার প্রক্রিয়া- জাতকরণ, চামড়া শিল্প ইত্যাদি।
সেবা খাত : সেলুন/লন্ড্রি, বিউটি পার্লার এবং হারবাল ট্রিটমেন্ট, পাওয়ার টিলার, কম্পিউটার সেবা, ফটোকপি সেবা, টিভি/ভিসিআর/বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি/ মোবাইল ফোন মেরামত, গ্রামীণ যানবাহন, সেলাই মেশিন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং/গাড়ি মেরামত ওয়ার্কশপ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার/ক্লিনিক/দন্ত চিকিৎসা, স্টুডিও, শিক্ষা সেবা (কোচিং সেন্টার/কিন্ডার গার্টেন), ক্যাবল অপারেটরস, জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ, কমিউনিটি সেন্টার, বিনোদন পার্ক, আবাসিক হোটেল, পর্যটন কটেজ, সোলার পাওয়ার, সাইবার ক্যাফে ইত্যাদি।
প্রাণিসম্পদ : দুগ্ধ খামার, গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল/ভেড়া/মহিষ পালন, ব্রয়লার/ককরেল মুরগীর খামার, লেয়ার মুরগীর খামার, কোয়েল/টার্কির খামার।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প : মৃৎ শিল্প, কামারের কাজ, ব্লক-বাটিক/প্রিন্টিং, গ্রামীণ স্যানিটারী ল্যাট্রিন তৈরি, তাঁত শিল্প, কাঠের/ স্টীলের আসবাবপত্র তৈরিকরণ, রেশম বস্ত্র উৎপাদনকারী শিল্প, কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি, মোমবাতি/আগরবাতি/গোলাপজল/দাঁতের মাজন/কয়েল তৈরি, বাঁশ ও বেত শিল্প, যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা, ক্ষুদ্র প্রিন্টিং এবং সাইনবোর্ড তৈরি, চামড়াজাত শিল্প, শুটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ, আইসক্রিম/বরফকল ইত্যাদি।
মৎস্য সম্পদ : মৎস্য চাষ : কার্প জাতীয়, পাংগাস, চিংড়ি, মনোসেক্স তেলাপিয়া, থাই কৈ, মিশ্র মৎস্য চাষ ও রেণু পোনা উৎপাদন (পুকুরে)।
অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রকল্প : মাশরুম চাষ, সবজি চাষ, সেরিকালচার (রেশম চাষ), ফল চাষ, মৌমাছি চাষ, নকশীকাঁথা তৈরি, পান বরজ, নার্সারী, ফুল চাষ ইত্যাদি।
যানবাহন/পরিবহন সেবা : টিভিসএস টু-হুইলার/থ্রি হুইলার-এর মাধ্যমে পণ্য/যাত্রী পরিবহন সেবা প্রকল্পে ঋণ প্রদান : লাইসেন্সপ্রাপ্ত/শিক্ষানবিশ ড্রাইভার/উদ্যোক্তাদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা, পণ্য সরবরাহ/পরিবহন সহজীকরণ, যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন, জেলা সদর, উপজেলা সদরসহ গ্রামাঞ্চলে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা পৌঁছানো, দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসকরণ ও বেকার যুবদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তাকরণের নিমিত্তে টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড-এর সাথে কর্মসংস্থান ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক সম্পাদন ও ঋণ প্রদান।
বাণিজ্যিক খাত : মুদি/মনোহারি, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, কাপড়ের ব্যবসা/তৈরী পোষাক ব্যবসা, প্রাণিখাদ্য/মৎস্যখাদ্য বিক্রয়, ধান/ চাল/অন্যান্য কৃষি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, সার/বীজ/কীটনাশক ব্যবসা, পার্টসের দোকান, ইলেকট্রিক সামগ্রী, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ঔষধ ব্যবসা, শুটকী মাছ ব্যবসা, পাথর ক্রয় বিক্রয়, বালি ক্রয়/বিক্রয় ব্যবসা, পুরাতন লোহালক্কর (স্ক্রেপ/ভাঙ্গারী) ব্যবসা, জুতার ব্যবসা, ক্রোকারিজ সামগ্রী ক্রয় বিক্রয়, হার্ডওয়ার ব্যবসা, হোটেল/রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, আসবাবপত্র বিক্রয়, অন্যান্য ব্যবসা/বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ব্যবসা ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: সোনালী ব্যাংকের শাখা সমূহ ঢাকা ২০২২
ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মসূচীর সুদহার নিম্নরূপ
যেসকল গ্রাহক ভাবছেন কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন করবেন। কিন্তু অনেকেই জানেনা এই ব্যাংকিং লনে কত পার্সেন্ট সুদ দিতে হবে। এই কাঁদে বিভিন্ন ব্যবসার উপরে বিভিন্ন ধরনের সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে।আপনাদের সুবিধার্থে কোন কোন ক্ষেত্রে কত পার্সেন্ট সুদ আপনাদের দিতে হবে সে সকল বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হল।
উৎপাদনশীল ও সেবামূলক খাত : ১১% , ঋণটি অনিয়মিত/খেলাপী হলে ১%এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হলে আরও ১% যোগ করে সুদারোপযোগ্য;
বাংলাদেশ ব্যাংক দুগ্ধ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজনন খাতে পুন:অর্থায়ন স্কীম (বিবিকৃপ) : ৫% ;
বাণিজ্যিক খাত : ১৩% , ঋণটি অনিয়মিত/খেলাপী হলে ১% এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হলে আরও ১% যোগ করে সুদারোপযোগ্য ;
বাংলাদেশ ব্যাংক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ঋণ সহায়তা কর্মসূচী (বিবিমপ্রাস) : ১০% ;
কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে ঋণ সহায়তা কর্মসূচী : ৮ – ৯% ;
ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণ কর্মসূচী : ১৩% ;
সকল ঋণের ক্ষেত্রে সরল সুদ প্রযোজ্য এবং সুদের হার পরিবর্তনযোগ্য।