জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
আজকে আমরা আলোচনা করব জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে। প্রথমেই একটি প্রশ্ন আসে নামাজ কাকে বলে এবং জুমার নামাজ আমরা কেন শুক্রবার দিন পরই। এই জুমার নামাজ তো আমরাও অন্য কোনো দিনও পড়তে পারতাম।তাহলে কেন আমরা শুক্রবার দিন জুমার নামাজ আদায় করি। আমি আশা করি সবার মনে তো এই প্রশ্নটিই অবশ্যই জাগতে পারে। তো আজকে আমরা সে সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব।
( জুমু, আহ) একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো একত্রিত হওয়া সম্মিলিত হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। আর এই জুমার নামাজ হলো ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। এই আমল কে জুমার নামায কেন বলা হয়,কারণ আমরা সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিন শুক্রবার এর সকল মুসলমান ভাইয়েরা একত্রিত হয়ে এবং কাতারবদ্ধ হয়ে জামায়াতের সঙ্গে জোহরের নামাজের পরিবর্তে যে নামায আদায় করে থাকে তাকে জুমার নামাজ বলা হয়।
শুক্রবার হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন।যার কারণে আল্লাহতালা আমাদের আদেশ করেছেন শুক্রবার দিন জুম্মার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা। এই পবিত্র জুমার দিনে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাযিল হয়েছে।
এই দিনে মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো ও আল্লাহকে অধিক রূপে স্মরণ করো যাতে তোমরা সফলকাম হও। সূরা জুমুআ, আয়াত: ১০
সহীহ মুসলিম থেকে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যার ওপর সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন এদিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে ।এই দিনে তাকে জান্নাতে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং এই দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।( সহীহ মুসলিম ১৪১০)
বিষয়বস্তু আজকের
- শুক্রবার জুমার দিনের গুরুত্ব
- জুমার নামাজ জামাতের সাথে পড়ার ফজিলত
শুক্রবার জুমার দিনের গুরুত্ব
আল্লাহতালা শুক্রবারের জুমার দিনে অসংখ্য নিয়ামত দান করেছে। সেগুলো বলে শেষ করা যাবে না। এই জুমার দিনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আল্লাহতালা এই দিনে অনেক কিছু সৃষ্টি করেছেন আবার অনেক কিছু ধ্বংস করেছেন। হ্যালো তালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন এই দিনে।শুক্রবারে জুমার এই দিনে হযরত আদম আলাই সাল্লাম ও হাওয়া আলাই সাল্লাম কে জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয়ে দিনটিকে জুমার দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রথম হিজরীতে আল্লাহতালা এই জুমার নামাজ ফরজ করে দিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত কালে মদিনায় পৌঁছে এই শুক্রবারে এবং বনী সালেম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছে যোহরের ওয়াক্ত হলে সেখানে তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন। এটি ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ।
জুমার নামাজ জামাতের সাথে পড়ার ফজিলত
এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথমদিকে মসজিদে হাজির হয় সে যেন একটি উট কুরবানী করল দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল তৃতীয় সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি ছাগল কোরবানির সওয়াব পেল এবং চতুর্থ সময়ের যে ব্যক্তি মসজিদে গেল সে জানে একটি মুরগি কোরবানির সওয়াব পেল। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসেগেলেন খুতবার জন্য তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুতবা শুনতে বসে যায়।( বুখারি: ৮৮১, ইফা ৮৩৭অাধুনিক ৮৩০)
রাসুলুল্লাহ (সা:)আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভালভাবে পবিত্র হল অতঃপর মসজিদের মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনতে চুপচাপ বসে রইল তার জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী 7 দিনের সাথে আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। পক্ষান্তরে খুতবার সময় যে ব্যক্তি পাথর নুরি কনা বা অন্যকিছু নাড়াচাড়া করল সে যেন অনর্থক কাজ করলো( মুসলিম: ৮৫৭)
আরো পড়ুন: