শবে বরাত কেন পালন করা হয়-এই রাতের ফজিলত ও আমল,সম্মনিত ভিজিটর,সালামুআলাইকুম। আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব, শবেবরাত কেন পালন করা হয়? এবং এ রাতের ফজিলত কি। যদি আপনি শবে বরাতের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন। কারণ আজকে আপনাদের শবে বরাত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করব। তাহলে চলুন বিস্তারিত জানা যাক।
শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়। শবে বরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে। শব মানে রাত, বরাত মানে মুক্তি; শবে বরাত অর্থ মুক্তির যামিনী। ‘শবে বরাত’-এর আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এই উভয়ের মাঝে যা আছে সেসবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সেদিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ [৬৪] দুখান, রুকু: ১, আয়াত: ১-১০, পারা: ২৫, পৃষ্ঠা ৪৯৬-৪৯৭/১৪-১৫)।
হজরত ইকরিমা (রা.) প্রমুখ কয়েকজন তফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, সুরা দুখানের দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত্রি বলে শবে বরাত বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)।
আরো জানুন: ২০২২ সালের রমজান কত তারিখ ও রমজান মাসের ক্যালেন্ডার
শবে বরাতের ফজিলত ও আমল
আমরা অনেক মুসলিম ভাই ও বোন রয়েছে যারা শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। শুধুমাত্র এতোটুকুই বুঝিয়েছে শবে বরাতের রাত্রে নামাজ আদায় করতে হবে। আজকে আমরা তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সুন্দর কিছু কথা শেয়ার করব।
হজরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন। তিনি আরও বলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ৭৩৯)।
হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন। আমি তখন উঠে তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়িশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে? আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না? নবীজি (সা.) বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, এটা হলো অর্ধশাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮২)।
শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাতের রাতে প্রত্যেকটি মুসলমান ভাই ও বোনেদের কোন কাজটি করণীয় এবং কোন কাজটি বর্জন করতে হবে সে সম্পর্কে যদি কারো অবগত না থাকে। তাহলে এই পোস্ট টুকু খুব মনোযোগ সহকারে পড়ো। এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করব শবে বরাতের রাতে কোন কাজটি করবেন এবং কোন কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
যা যা করা উচিত:
- নফল নামাজ
- তাহিয়্যাতুল অজু,
- দুখুলিল মাসজিদ,
- আউওয়াবিন,
- তাহাজ্জুদ,
- ছলাতুত তাসবিহ
- তাওবার নামাজ,
- ছলাতুল হাজাত,
- ছলাতুশ শোকর