মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা 2022,সম্মানিত শিক্ষার্থী বৃন্দ। যারা মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা খুজতেছেন তার সঠিক পোস্টে ভিজিট করেছেন। আজকে আমরা আপনাদের সাথে মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা শেয়ার করব। যারা মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা টি খুজতেছেন তারা আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। কারণ আমরা আপনাদের সাথে সঠিক তথ্য শেয়ার করব।
বর্তমান সময়ে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে তারা সঠিক তথ্য বা সাজিয়ে-গুছিয়ে তথ্যগুলো শেয়ার করতে পারে না। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী বিভ্রান্তি মুখে পড়ে যায়। তাদের কথা মাথা রেখেই আজকে আমরা পরিপূর্ণভাবে মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা টি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আরো পড়ুন>> ছোটদের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি ৫০০ শব্দের রচনা
মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা
ভূমিকা: বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা দিবসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রত্যেকটি বাঙালি জাতির জীবনে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 1971 সালের 25 মার্চ রাতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে এই দিনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে 27 মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে জিয়াউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার গ্রহণের ডাক দেয়। এ দিনটিকে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। 1972 সালের 22 জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এবং এই দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রেক্ষাপট : পশ্চিম পাকিস্তানিরা 1971 সালের 25 শে মার্চ গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশ এর নিরীহ জনগণের ওপর হামলা চালায়। তারা এ রাতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গোলাবর্ষণ করে এবং অনেক স্থানের নারীর উপর নির্যাতন চালায়। এছাড়াও অনেক স্থানে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানো হয়। এ রাতকে কাল রাত হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। যার ফলে তারা যুদ্ধের ঘোষণা অপেক্ষা করে তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর এর আদেশে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের ডাক দেয়। যুদ্ধের ডাক শুনে আপামর বাঙালি জাতি হয়ে ওঠে লড়াকু যোদ্ধা। তারা দেশকে বাচানোর জন্য দেশের মা বোনের ইজ্জত বাঁচানোর জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ 9 মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়।
স্বাধীনতা দিবসের অপারেশন সার্চলাইট: অপারেশন সার্চলাইট পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত একটি গণহত্যার প্ল্যান তারা তৈরি করে। যা 1971 সালের 25 শে মার্চ থেকে শুরু হয়। তারা এই অপারেশন সার্চলাইট এর মাধ্যমে 1971 সালের মার্চ মাসের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যেই বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সকল কার্যক্রম দমন করতে চেয়েছিল। 25 শে মার্চের গণহত্যার পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের আদেশে পরিচালিত হয়। এটি 1970 এর নভেম্বরের সংঘটিত অপারেশন এর পরবর্তী ধাপ। তারা চেয়েছিল 26 শে মার্চের মধ্যে বাংলাদেশের বড় বড় শহর দখল করে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিরোধীদের এক মাসের ভিতরে নিধন করে দেওয়া।
স্বাধীনতা দিবসের ঘোষণা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 1971 সালের 25 মার্চ রাতে হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। তিনি গ্রেফতার হওয়ার একটু আগেই 25 শে মার্চ রাতের বারোটার পর 26 শে মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করেন। যা পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে জিয়াউর রহমান তৎকালীন ই পি আর এর ট্রান্সমিটারে করে প্রচার করার জন্য পাঠানো হয়। তারপর 26 শে মার্চ প্রথম প্রহরে বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কালাম শহর চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান প্রথম শেখ মুজিবর এর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র টি মাইকিং করে প্রচার করেন। তারপর মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। 27 শে মার্চের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে এবং নতুন একটি মানচিত্র পতাকা সৃষ্টি হয়।
স্বাধীনতা দিবস উৎযাপন : ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই পদক প্রদান করা হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে উদ্যাপন শুরু হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়।
উপসংহার: প্রত্যেকটি মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীনতার অধিকার পায়। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি মানুষের স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ধীরে ধীরে এই স্বাধীনতা হারিয়ে যাচ্ছে। কারণ বর্তমান সময়ে নাগরিকের অধিকার সঠিক ভাবে দেয়া হচ্ছে না। একটি কুচক্রী মহল তারা নাগরিকের সকল অধিকার ভোগ করে তারা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে। যারা আমাদের এই দেশকে রক্ষা করার জন্য বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শহীদ হয়েছে তাদের আদর্শ আমাদের মেনে চলতে হবে। তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে এবং সম্মান করতে হবে। তাদের আদর্শ বুকে ধারণ করে আমাদের দেশকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পাব এবং আমাদের স্বাধীনতার অধিকার পাবো।