কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২২
সম্মানিত পাঠক, যারা কৃষি ঋণ নেবেন বলে ভাবতেছেন। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কি কি খাদের উপর কৃষি ঋণ দিয়ে থাকে এবং এই ঋণগুলো নেওয়ার প্রসেস এর বিস্তারিত ইনফরমেশন আপনাদের সাথে শেয়ার করব। দয়া করে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন। তাহলে আপনারা কৃষিঋণের একটি বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন। কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২২ নিচে আলোচনা করা হলো।
কৃষি ঋণ শব্দটি আনেক ব্যাপক। এর মধ্যে রয়েছে আনেকগুলো ভাগ। যেমন- শস্য ঋণ, মত্স্য ঋণ, পোল্ট্রী ও ডেইরী ঋণ। শস্য ঋণ ব্যতীত অন্যগুলো প্রকল্প ভিত্তিক।
পোল্ট্রী ঋণ : পোল্ট্রী বার্ডস অনুযায়ী ঋণ হয়। এগুলোর ক্ষেত্রে আবার ভাগ রয়েছে যেমন-লেয়ার, ব্রয়লার এবং দেশী মুরগী। এখানে হাউসহোল্ড অনুযায়ী লোন ১০-১৫,০০০/- টাকা। ফার্ম হলে ২০/২৫,০০০-কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়।
মত্স্য ঋণ : মত্স্য ঋণ হয়ে থাকে পারিবারিকভাবে/ পুকুরের পরিমান অনুযায়ী। এখানে উল্লেখ্য যে, পুকুর পুনঃনন প্রকল্পতেও ঋণ দেওয়া হয়। কার্প জাতীয় মাছ যেমন -কাতলা, রুই এছাড়া চিংড়ি ঘেড় অনুযায়ী সবোর্চ্চ ঋণের সীমা হতে পারে ২ কোটি টাকা পযর্ন্ত। এবং সর্বনিম্ন আধাবিঘা পর্যন্ত দশ থেকে পনের হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।সূদের হার ৮%।
ডেইরী ঋণ : ডেইরী ঋণ দুগ্ধ গাভী প্রতি ২৫,০০০/- টাকা, হালচাষ করা গরুর জন্য ২০,০০০/- টাকা এবং মহিষের জন্য ২০,০০০/- টাকা।
কৃষি ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ প্রাপ্তির নিয়মাবলী
প্রথম কাজ: ঋণ গ্রহীতা যে এলাকায় বসবাস করেন সে এলাকায় তার বাড়ী/ প্রকল্প হলে তিনি প্রথমে সে এলাকার কৃষি ব্যাংকে প্রথমে যোগাযোগ করবেন।
সেবা প্রদানকারীর কাজ: ঋণ গ্রহীতাকে কৃষিঋণ উত্তোলনে প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য প্রদান করবেন।
দ্বিতীয় কাজ: ব্যাংকের নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ।
সেবা প্রদানকারীর কাজ: ফরম সরবরাহ
তৃতীয় কাজ: ফরম পূরণ
চতুর্থ কাজ: ফরম জমা।
পঞ্চম কাজ: প্রয়োজনীয় রশিদ এবং কাগজপত্রসহ ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত স্থানে স্বাক্ষর করে ঋণ উত্তোলন।
সেবা প্রদানকারীর কাজ:আবেদনকারীর সকল কাগজপত্র পরীক্ষা করে সঠিক প্রমানিত হলে ঋণ প্রদান।
কৃষি ব্যাংক ঋণ প্রদানে সাধারন কাগজপত্র
সবর্ক্ষেত্রে প্রযোজ্য (স্বল্প পরিমান ঋণের ক্ষেত্রে )
ক) ব্যাংকের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে আবেদনকারীর / আবেদনকারীগণের দুই কপি (সত্যায়িত) পাসপোর্ট সাইজের ফটো
খ)জাতীয়তা সনদ
গ) জমির জামানতের কাগজ, দাগ খতিয়ান, নামধারী
ঘ) স্থানীয় পৌরসভার হোণ্ডিং ট্যাক্সের কাগজ
ঙ) সরকারী চাকুরীজীবি হলে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী কর্মকর্তার নিকট থেকে ঋণ গ্রহণে অনাপত্তি সার্টিফিকেট প্রদান
অধিক/প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে
উপরোক্ত সাধারণ কাগজপত্র সহ
- নিজস্ব বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের উত্স্ সম্পর্কে ঘোষনা।
- স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ/ আয়ের ঘোষনাপত্র
- প্রজেক্ট প্রোফাইল, কারিগরী ব্যবস্থাপনা, ঋণ গ্রহণের যোগ্যতা প্রতিবেদন, মোট প্রকল্প ব্যয় নির্মান খরচের বিস্তারিত হিসাব, আর্থিক বিশ্লেষন ইত্যাদি।
- পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদে হালসনের কর প্রদানের রশিদ।
- আয়ের স্বপক্ষে দালিলিক প্রমান।
- প্রকল্প জমির হাতে আঁকা রষ্ট ম্যাপ।
- প্রকল্পের সাইট প্ল্যান/লে আউট প্ল্যান
- ঋণের পরিমান ২৫,০০০ টাকার নিম্নে হলে ১৬ টাকার ১টি রেভিনিউ ন্ট্যাম্প এবং বন্ধকী ঋণের ক্ষেত্রে ২৫ টাকার ডিপি নোট স্ট্যাম্প লাগবে।
- হাঁস-মুরগীর খামার, দুগ্ধ খামার, মৎস্য খামার, ছাগল পালন এ ধরণের কৃষি ভিত্তিক ছোট প্রকল্পের ক্ষেত্রে পরিবেশ দূষন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ছাড়পত্র গ্রহণের পরিবর্তে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেমনঃ- পৌর কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ছাড়পত্র গ্রহণ সাপেক্ষে ঋণ মঞ্জুর করা যাবে।
- ইনকাম ট্যাক্স সার্টিফিকেট এছাড়াও জমি বন্ধক রাখা হয়।
শস্য ঋণের ক্ষেত্রে আবেদন
ক) শস্য ঋণের ক্ষেত্রে আবেদন গ্রহনের ৩ দিনের মধ্যে ঋণ মঞ্জুর করা হয়।
খ) প্রকল্প বিহীন অন্যান্য ঋণ আবেদন গ্রহনের ৭ দিনের মধ্যে মঞ্জুর করা হয়।
গ) প্রকল্প ঋণ এক থেকে দেড় মাস এর মধ্যে মঞ্জুর হয়।
শিক্ষক/সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য বিশেষ ক্ষুদ্র ঋণ
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড-এর যে সকল শাখার মাধ্যমে বেতন ভাতা প্রদান করা হয় কেবলমাত্র ঐ সকল শাখা হতে এই বিশেষ ক্ষুদ্র ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে।
বেসরকারী/স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা/কর্পোরেশনের কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং সরকারী/বেসরকারী (এমপিওভুক্ত কলেজ, মাদ্রাসা ও প্রাথমিক/মাধ্যমিক বিদ্যালয়)-এর শিক্ষকবৃন্দ। আবেদনকারীকে স্থায়ী চাকুরীজীবী হতে হবে এবং এলপিআর-এ যাবার তারিখ পূর্ণ হতে কমপক্ষে তিন বৎসর চাকুরী থাকতে হবে।
ঋণ সীমা:
২০,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
মার্জিন:
ঋণ সীমার ২০ শতাংশ।
মেয়াদ ও কিস্তি:
মেয়াদ ১২ মাস থেকে ৩৬ মাস পর্যন্ত। মেয়াদের উপর ভিত্তি করে মাসিক কিস্তির টাকা নির্ধারিত হবে।
সুদের হার:
১২ শতাংশ হারে (সরল সুদ) যা পরিবর্তনযোগ্য।