নীল ক্যাফের ডায়েরী,সম্মানিত পাঠক, আপনি কি নীল ক্যাফের ডায়েরী গল্প গুলো খুঁজতেছেন? আপনি কি নীল ক্যাফের ডায়েরী নতুন নতুন গল্প জানতে চান বা নতুন নতুন পোস্ট পড়তে চান। তাহলে আপনি সঠিক পোস্টে ভিজিট করেছেন। কারণ আজকে আমরা নীল ক্যাফের ডায়েরী এর নতুন নতুন সব পোস্ট এবং গল্পের পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। যেখান থেকে আপনারা খুব সহজেই সুন্দর সুন্দর গল্প পর্ব গুলো পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন গল্পগুলো বা পোস্ট গুলো দেখা যাক।
নীল ক্যাফের ডায়েরি পার্ট 1
এখন আমরা আপনাদের সাথে এই গল্পের প্রথম পর্ব শেয়ার করব। তাহলে চলুন গল্পটা দেখা যাক।
এভাবে চোরের মত এদিক ওদিক কি দেখছো?
পালাতে চাইছ? লাভ নেই। গাড়ি লক করা।
আহনাফের এককথায় বর্ষার প্রাণ পাখি খাচা থেকে উড়ে যাওয়ার জোগাড়। কিন্তু লোকটা কি অন্তর্যামী?
মনের কথা পড়তে পারে? না হলে সে কি করে জানল অর্ষা যে সত্যি সত্যি পালাতে চাইছ।
পুরনো টেকনিক অবলম্বন করল অর্পা। ভয়ে কাচুমাচু হয়ে তোতাপাখির মতো বলল, দুঃখিত।
আমি দেখিনি। সরি, সত্যিই আমি খেয়াল করিনি।
এই সস্তা শব্দ টা বারবার বলবে না তো! বিরক্ত লাগে আমার।
কিছু হলেই সরি!
অর্ষা অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকে। মানুষ ভুল করলে সরি বলবে না তো কি বলবে?
ঘরের দিকে নজর পরতেই সে তড়িঘড়ি করে বলল,
আর মাত্র 5 মিনিট আছে। আমার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। আমি এখন ঐ যাই?
দরজা আনলক করে আহনাফ বলল, যাও।
অর্ষা গাড়ি থেকে নেমে যায়। কিভাবে যেন আহনাফ গাড়ি থেকে নামে। কিন্তু সেতো অর্ষার নামটা জানে না। কিভাবে ডাকবে?
কোন সম্মোধন খুঁজে না পেয়ে বলল, এই মেয়ে? এই মেয়ে?
সেই গুরু গম্ভীর কণ্ঠে শুনি অর্ষা দাঁড়িয়ে পড়ে।
লোকটার রাগ কমেনি? বকবে নাকি এখানে?
সে ভীত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আহনাফ কাছে এসে মানিব্যাগ থেকে 100 টাকা দুটো নোট বের করে অর্ষার হাতে গুঁজে দেয়।
অর্ষা বিশমিত কন্ঠে জানতে চায়, এটা কিসের?
যাওয়ার সময় যাবে কিভাবে? আহিল তো আর আসবেনা। আমিও তো আর তোমায় নিতে আসবো না।
অর্ষা আসলো। হেসে বলল কলেজ থেকে বাড়িতে যেতে আমার 200 টাকা প্রয়োজন নেই।
10 টাকা লাগবে মাত্র
সেটাও আমি বন্ধুদের কাছ থেকে নিয়ে নেব।
এক টাকা আমার লাগবে না। আপনাকে ধন্যবাদ, আজ আমায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কথাটা বলেছে আহনাফের হাতে টাকাটা গুঁজে একটা দৌড় দেয়।
আনাফ কিছুক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। এবারও মেয়েটির নাম জানা হলো না। নাম যা কিছু হোক , তাতে কার কি?
এত বেশি মাথা ঘামানোর তো কিছু নেই। তাই সে আর বেশি চিন্তাভাবনা না করে বাড়িতে গিয়ে বসে।
কলেজের বারান্দায় দাঁড়িয়ে এতক্ষণ সবটা দেখছিল জুই,
রেশমি, লামিয়া আশিক আর দিদার।
অর্ষা উপরে আসতেই তিন বান্ধবী ওকে ঘিরে ধরে। অর্ষা ভয় পাওয়ার সাথে সাথে চমকে যায়। রেশমি করুন কন্ঠে বলে কিরে? এতদিন ধরে চলছে এসব?
লামিয়া ন্যাকা কান্না করে জিজ্ঞেস করে।
তুই এমন টা করতে পারলে অর্ষা?
তলে তলে এত কিছু? তাও মাত্র একদিন এই।
জুই গভীর কন্ঠে বলে, সত্যি করে বল তার সাথে আগে থেকেই তোর হাত টা চলছে না তো?
ইয়ামাহা বদ, তুই এমন বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারলি?
আমাদের ভাগ না দিয়ে একাই মিলি।
আবারো ন্যাকা কান্না করে বলল লামিয়া।
ওরা একের পর এক চেহারা অর্সা কি করে চলছে।
এদিকে এসে ওদের কথা মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছেন।
আর বোঝার পূর্বেই ক্লাস শুরু হওয়ার বেল বেজে যায়।
তাই সবাই একসাথে ক্লাসে চলে যায়।
কিন্তু তিন জনের একজনও ওর সাথে কথা বলছে না।
প্রতিদিন চারজন একসাথে এক বেঞ্চে বসলেও, আজ তিনজন ব্যাগ নিয়ে তিন বেঞ্চে গিয়ে বসেছে।
ওদের এমন ব্যবহারে হতাশ হয়ে অর্ষা একাই সেই বেঞ্চে বসে পড়ে। ক্লাস এর মাঝেই পাশের বেঞ্চের একটা মেয়ে কাগজের টুকরা অর্ষার হাতে দিয়ে ফিসফিস করে বলল, আশিক দিয়েছে।
ফর্সা কাগজটি নিয়ে লুকিয়ে পড়ে। আশিক কে লিখেছে, ওদের তিনজনের কথা বাদই দিলাম। আমি আর দিদার কি দোষ করলাম? তুই আমাদের কেন জানালি না।
সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তার। সে আড়চোখে একবার আসি আর দিদারের দিকে তাকায়।
ওদেরকে অর্ষার চেয়েও আরো বেশি হতাশ দেখালো।
না জানি ওদের কেউ না জানিয়ে কত বড় ভুল করেছে অর্সা। কিন্তু সেই ভুলটাই বাকি? ভুলটা কি জানার জন্য ওকে চারটা ক্লাস শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হলো।
টিফিনের সময় কেউ আসার সঙ্গে কথা বলোনা। মুখ ঝামটা মেরে ক্যান্টিনে চলে যায়। অর্সা ও যায় পিছু পিছু। অসহায়ের মত মুখ করে বলে, না বললে বুঝবো কি করে? কি করেছি সেটা তো বল।
দাও দাও করে অগ্নির মতো জ্বলে উঠলো জুই বলল, আহা গো! সোনা গো আমার। এখন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না। কি করেছ তুমি বোঝনা। আমি সত্যি বুঝতে পারছি না বিশ্বাস কর।
লামিয়া এবার বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। বর্ষার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দু গালে আলতো করে হাত রেখে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে। জান আমার ময়না পাখি বল সব মিথ্যে। বল তার সাথে ওর কোন সম্পর্ক নেই?